খেলা

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস

0
afg

পেসার গুলবাদিন নাইবের বোলিং নৈপুন্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের নজির গড়েছে আফগানিস্তান। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটে গ্রুপ-১এ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানরা ২১ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৬ বারের দেখায় এই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারালো আফগানিস্তান।

এই জয়ে সুপার এইট পর্বে ২ ম্যাচে ২ পয়েন্ট আছে আফগানিস্তানের। একই অবস্থা অস্ট্রেলিয়ারও। এই পর্বে শেষ রাউন্ডের ম্যাচে ভারতের কাছে অস্ট্রেলিয়া হারলে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলেই সেমিফাইনালে খেলবে আফগানরা। তবে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া জিতলেও, বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততেই হবে আফগানিস্তানকে। তখন রান রেট বিবেচনা করা হবে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে রান রেটে বেশ পিছিয়ে আফগানরা। সেমিফাইনালে খেলতে হলে পরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জিতলেই চলবে অস্ট্রেলিয়ার।

সুপার এইটে ২ ম্যাচ খেলে জয় না পেলে এখনও বিশ্বকাপে টিকে আছে বাংলাদেশ। শেষ রাউন্ডের ম্যাচে ভারতের কাছে অস্ট্রেলিয়া হারলে এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতলে সেমির দৌড়ে থাকবে বাংলাদেশ। তখন রান রেট বিবেচনায় বসতে হবে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানকে।

এদিন সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৫ বলে ১১৮ রান যোগ করেন তারা। এবারের বিশ্বকাপে এই নিয়ে তৃতীয়বার শতরানের জুটি গড়লেন গুরবাজ ও ইব্রাহিম। জুটি গড়ার পথে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে গুরবাজ দশম ও ইব্রাহিম অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন।

১৬তম ওভারে গুরবাজকে থামিয়ে আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন টি-টোয়েন্টিতে এক নম্বর অলরাউন্ডার অস্ট্রেলিয়ার পেসার মার্কাস স্টয়নিস। ৪টি করে চার-ছক্কায় ৪৯ বলে ৬০ রান করেন গুরবাজ। ১৭তম ওভারে অস্ট্রেলিয়া স্পিনার জাম্পার শিকার হন ৬টি চারে ৪৮ বলে ৫১ রান করা ইব্রাহিম।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত শুরুর পরও বড় সংগ্রহ পায়নি আফগানিস্তান। কারন এ ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্স। ১৮তম ওভারের শেষ বলে আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খানকে এবং শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে করিম জানাত ও নাইবকে আউট করে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন কামিন্স। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মাতাচ্ছেন বোলাররা

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে টানা দুই ম্যাচে হ্যাট্টিকের রেকর্ড গড়লেন কামিন্স। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে ১৯৯৯ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে হ্যাটট্রিক করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার ওয়াসিম আকরাম। এছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে এখন দু’টি হ্যাট্টিকের মালিক কামিন্স। ওয়ানডে বিশ্বকাপে দু’টি হ্যাট্টিক আছে শ্রীলংকার পেসার লাসিথ মালিঙ্গার।

কামিন্সের তোপে শেষ ৫ ওভারে ৬ উইকেটে মাত্র ২৯ রান যোগ করতে পারে আফগানিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৪৮ রানের সংগ্রহ পায় তারা। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ২৮ রানে কামিন্স ৩টি ও জাম্পা ২টি উইকেট নেন।

১৪৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ওপেনার ট্রাভিস হেডকে শূণ্য রানে এবং তিন নম্বরে নামা অধিনায়ক মিচেল মার্শকে ১২ রানে বিদায় দেন আফগানিস্তানের পেসার নাভিন উল হক। চতুর্থ উইকেটে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও স্টয়নিসের ৩২ বলে ৩৯ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠে অস্ট্রেলিয়া। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রান করে আফগানিস্তানের নিশ্চিত জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল।

১১তম ওভারে স্টয়নিসকে ১১ রানে আউট করে আফগানিস্তাকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাইব। এরপর আরো ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারের মুখে ঠেলে দেন নাইব।

টিম ডেভিডকে ২, ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪১ বলে ৫৯ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে এবং কামিন্সকে ৩ রানে বিদায় দেন নাইব। এতে ১১১ রানে অষ্টম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

শেষ পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৪ ওভারে ১২৭ রানে গুটিয়ে ম্যাচ হারে অস্ট্রেলিয়া। এই হারে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টানা ৮ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড থামলো অসিদের। আফগানিস্তানের পক্ষে ৪ ওভার বোলিংয়ে ২০ রান করে খরচ করে নাইব ৪টি এবং নাভিন ৩টি উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

আফগানিস্তান : ১৪৮/৬, ২০ ওভার (গুরবাজ ৬০, ইব্রাহিম ৫১, কামিন্স ৩/২৮)।

অস্ট্রেলিয়া : ১২৭/১০, ১৯.২ ওভার (ম্যাক্সওয়েল ৫৯, মার্শ ১২, নাইব ৪/২০)।

ফল : আফগানিস্তান ২১ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: গুলবাদিন নাইব(আফগানিস্তান)।

এবার সহজেই বানিয়ে ফেলুন কাঁঠালের আইসক্রিম

Previous article

রুক্ষ, নিষ্প্রাণ চুলের জেল্লা ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করুন ঢেঁড়স

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in খেলা